নিহত মফিজুলের মরদেহ উত্তোলনকে ঘিরে চাঁচকৈড় বালিকা দাখিল মাদ্রসার সামনে উৎসুক মানুষের ভিড়। রোববার (৩ মার্চ) মরদেহ উত্তোলন করা হয়। অবশেষে বস্তাবন্দি অবস্থায় বেরিয়ে আসতে নিহতের দেহের বিভিন্ন অংশের হাড্ডিমজ্জা।
উদ্ধার কাজ পরিচালনা করেন নাটোর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ.টি.এম. মাইনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরিফুল ইসলাম, গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান শাকিল, সিংড়া সার্কেল মো. আক্তারুজ্জামান, গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. উজ্জ্বল হোসেন, ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. শহিদুল ইসলামসহ থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।
তথ্যমতে, ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ হন নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার খলিফাপাড়া মহল্লার মো. আজাদ প্রামানিকের ছেলে মফিজুল ইসলাম। ঘটনার ২২ মাস পর নাটকীয়ভাবে জানতে পারেন তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
মফিজুলের পুঁতে রাখা লাশের অনুসন্ধানে পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে একে একে হাজির করেন হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন আসামিকে। গুরুদাসপুর শহরের চাঁচকৈড় পুরানপাড়া মহল্লার একটি বালিকা মাদ্রাসার ওয়াসরুমের সেপটিক ট্যাংকের ভিতরে নিহত মফিজুলের লাশটি রেখে উপরের পাকা করে স্টাইলস লাগিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছিলো।
নাটোর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ.টি.এম. মাইনুল ইসলাম বলেন, মফিজুল ইসলাম ও তানজিলা খাতুন খলিফাপাড়া মহল্লার মাহী বেকারিতে শ্রমিকের কাজ করতেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে তানজিলা-আল হাবিব দম্পতির মধ্যে কলহ দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে তানজিলার বাবার কাছে অভিযোগ করেন জামাতা।
তানজিলা মোবাইল ফোন দিয়ে মফিজুলকে তার বাসায় ডেকে নেন ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল দিবাগত রাতে। মফিজুল বাসায় আসামাত্রাই হাত-পা বেঁধে ও মুখে স্কচটেপ দিয়ে আসামিরা মফিজুল ইসলামকে হত্যা করে। পরে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে জামাতা আল হাবীব ও শ্বশুর আবু তাহের খলিফা তার কর্মস্থল চাঁচকৈড় বালিকা দাখিল মাদ্রাসার ভেতর নিয়ে নব নির্মিত ওয়াস রুমের সেফটি ট্রাঙ্কের পাশেই মাটি খুরে খাঁরা করে পুঁতে রাখেন। সে সময় ছেলে নিখোঁজের ঘটনায় মফিজুলের মা গুরুদাসপুর থানায় ২০২২ সালের ৭ মে একটি জিডি করেছিলেন।
এ ঘটনায় মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী আবু তাহের খলিফা, তার মেয়ে তানজিলা খাতুন, জামাতা আল হাবিব সরকার ও তাদের আত্মীয় আশরাফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ।
টিএইচ